মূল পাতা জাতীয় নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কোনো কম্প্রোমাইজ করব না : ইসি আলমগীর
রহমত নিউজ ডেস্ক 16 March, 2023 08:12 PM
নির্বাচন কমিশনার-ইসি মো. আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব থেকে আমরা সরে যাব। আমাদের কম্প্রোমাইজ করতে হলে এ চেয়ারে দেখবেন না। আমরা যে কাজের জন্য শপথ করেছি সেটা যদি না-ই করতে পারি তাহলে এই চেয়ারে থাকব কেন? আমাদের কমিশনে যারা আছি সকলের মনোভাব একইরকম। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না এটা বিশ্বাস করি না। প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরে যাব। দেশি-বিদেশি কেউ কোনো চাপ দেয় না।আজ (১৬ মার্চ) বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি আলমগীর বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে না, এ ধারণা ভাঙার দায়িত্ব দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। এখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ বিষয়টিতে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানও সেই দায়িত্ব আমাদের দেয়নি। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তারা যেন স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমত পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, ভোট গণনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, নির্বাচনের ফলে যাতে ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে, সেসব বিষয় নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আমরা সে দায়িত্ব পালনের প্রতি শতভাগ অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছি। আমরা সেটা করব। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, যে ধরনের সরকারই থাকুক না কেন বর্তমান ইসি শতভাগ সৎ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। বিরোধী দল কেন করছে না সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমাদের এক বছরের কার্যক্রম দেখে তারা কি বলতে পারবে আমরা নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করেছি? অথবা দুই প্রার্থীর প্রতি আচরণ দুই রকম হয়েছে? কমিশন চাইলে সেটা সম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশন কতটা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি এবং সেটা আমাদের ইচ্ছা আছে, অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। অতীতে কেন পারেনি সেটা অতীতের কমিশন বলতে পারবে। আগের কমিশন আর বর্তমান কমিশনের লোক ভিন্ন। তাদের আচরণের সঙ্গে এদের আচরণ মিলবে না। সংবিধান কি সেই দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে? আমাদের বিভিন্ন অংশীজন, সুশীল সমাজের মতামত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া আছে। এখন আর হচ্ছে না। হয়ত পরবর্তীতে হতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন তারা বড় উদাহরণ। প্রশাসনে যারা কাজ করেছিলেন, যাদের গাফিলতি পাওয়া গেছে বা যারা অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি এবং সেটা মনিটরিং করছি। কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আমরা দুই এক সপ্তাহ পরপরই মনিটরিং করছি। প্রার্থীর সংশ্লিষ্টতা তো আমরা বলতে পারি না। যারা জড়িত ছিল তারা প্রার্থীর কথা বলেনি। তারা কেন বলল না সেটাই রহস্য। তাদের বারবার প্রশ্ন করা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা বারবার প্রশ্ন করেছেন এমন কাজ করলেন কেন, তারা বলেছেন আমরা স্বেচ্ছায় করেছি। এখন তারা যদি বলেন স্বেচ্ছায় করেছি। তাহলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। তারা যদি কারো নাম বলত আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম। এখানে তো অনুমানভিত্তিক কোনো অ্যাকশন নেওয়া যায় না। যেকোনো প্রশাসনিক, বিচারিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে আপনাকে যা তদন্তে প্রমাণিত হবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়টি আমরা তফসিল ঘোষণা আগে দেখব। আমাদের কিছু কৌশল থাকবে, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। সেই কৌশলগুলো তো আমরা বলব না। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে গ্যারান্টি দিচ্ছি আমরা। আমরা যতক্ষণ আছি এ চেয়ারে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাব।